তালেবানের সঙ্গে লড়াই: তাজিকিস্তানে পালালো হাজারের বেশি আফগান সেনা

UPDATE NEWS

20/recent/ticker-posts

তালেবানের সঙ্গে লড়াই: তাজিকিস্তানে পালালো হাজারের বেশি আফগান সেনা

 

তালেবানের সঙ্গে লড়াই-সংঘর্ষে টিকতে না পেরে এক হাজারেরও বেশি আফগান সেনা সীমান্ত অতিক্রম করে প্রতিবেশী দেশ তাজিকিস্তানে পালিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।  তাজিকিস্তানের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সেনারা জীবন বাঁচাতে’ পিছু হটে গিয়ে সীমান্ত পেরিয়ে এসেছে।

আফগানিস্তান থেকে বিদেশি সেনারা চলে যেতে থাকার মধ্যে তালেবানের দাপট বাড়তে শুরু করেছে। একের পর এক জেলা তালেবানের দখলে চলে যাচ্ছে। বিশেষ করে সম্প্রতি কয়েক সপ্তাহে দেশের উত্তরে তালেবানের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে।

তাজিক সীমান্ত বাহিনী তাদের বিবৃতিতে বলেছে, সোমবার সকালে তালেবান জঙ্গিদের সঙ্গে লড়াইয়ের পর আফগান সরকারি বাহিনীর এক হাজারের বেশি সেনা সীমান্ত পেরিয়ে তাজিকিস্তানে ঢুকেছে।

প্রাণ বাঁচাতে মোট ১ হাজার ৩৭ আফগান সেনা সাতটি পথ দিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করেছে বলে জানানো হয়েছে বিবৃতিতে। মানবতার খাতিরে তাজিক কর্তৃপক্ষ এই সেনাদের তাদের ভূখন্ডে ঢুকতে দিয়েছে।

বিবিসি জানায়, গত তিদনদিন ধরেই আফগান সেনারা তাজিকিস্তানে পালাচ্ছে। সব মিলে এ পর্যন্ত ১ হাজার ৬০০ সেনা সীমান্ত পেরিয়েছে।

তাজিকিস্তানের সীমান্তবর্তী আফগানিস্তানের বাদাখশান ও তাখার প্রদেশে তালেবান যোদ্ধারা দ্রুতই অগ্রগতি অর্জন করছে। তালেবান যোদ্ধারা এখন ওই অঞ্চলের বেশিরভাগই দখলে নিয়ে নিয়েছে। তাছাড়া, পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে অন্তত একটি আফগান সেনাফাঁড়ি তালেবান দখল করেছে বলেও খবর এসেছে।

সোমবার রয়টার্স বার্তা সংস্থাকে ঊধ্র্বতন এক আফগান কর্মকর্তা বলেন, “তালেবান সব রাস্তা বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। এখন এইসব মানুষদের সীমান্ত পেরোনো ছাড়া আর কোথাও যাওয়ার উপায় নেই।” বাদাখশান প্রদেশের পার্লামেন্টের সদস্য জাবিহুল্লাহ আতিক জানান, এই সেনারা বিভিন্ন পথ দিয়ে পালিয়ে গেছে।

আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি বেশ জোরের সঙ্গেই বলেছিলেন, আফগান নিরপত্তা বাহিনী জঙ্গিদের দূরে ঠেলে রাখতে পুরোপুরি সক্ষম। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে ভিন্ন চিত্র। আরও অনেক সেনাই লড়াই থেকে বাঁচতে পাকিস্তান এবং উজবেকিস্তানে আশ্রয় খুঁজছে বলেও খবর পাওয়া যাচ্ছে।

আফগানিস্তানের জনগণের জন্য এই সময়টি উদ্বেগের বলে বর্ণনা করেছেন বিবিসি’র আন্তর্জাতিক বিষয়ক প্রধান সংবাদদাতা। “দেশ কোথায় যাচ্ছে তারা জানে না, নিজেদের শহর-গ্রামের কি হবে তাও জানা নেই, এমনকী তাদের নিজেদের জীবন এবং পরিবারের ভবিষ্যতেরও কোনও নিশ্চয়তা নেই”, বলেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোট ২০০১ সালের অক্টোবরে আফগানিস্তানে ক্ষমতা থেকে তালেবানদের উৎখাত করেছিল। যুক্তরাষ্ট্রে ওই বছরের ১১ই সেপ্টেম্বরে টুইন টাওয়ারে সন্ত্রাসী হামলার জন্য দায়ী জঙ্গি গোষ্ঠী আল কায়েদার সাবেক প্রধান ওসামা বিন লাদেন ও অন্যান্য আল কায়েদা নেতাদের আশ্রয় দিয়েছিল তালেবান।

কিন্তু পশ্চিমাদেশগুলোর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের জন্য আফগানিস্তান আর বিদেশি জিহাদিদের স্বর্গভূমি হবে না সে নিশ্চয়তার ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এখন সেখান থেকে বাদবাকী বিদেশি সেনা প্রত্যাহার করে নিচ্ছেন। এ প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকেই আফগানিস্তানে তালেবান সহিংসতা বেড়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন আফগানিস্তান থেকে সব বিদেশি সেনা পুরোপুরি প্রত্যাহার করার সময়সীমা নির্ধারণ করেছেন এবছর ১১ সেপ্টম্বরে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে হামলার ২০ তম বর্ষপূর্তির দিনে। তার আগে ৪ জুলাইয়ের মধ্যেই প্রত্যাহার হয়ে গেছে বেশিরভাগ সেনা। 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ